Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব

বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব

 

 

অম্বিকাচরণ মজুমদার (সমাজসেবক ও রাজনীতিবিদ)

 

আম্বিকাচরণ মজুমদার ১৮৫১ সালে ৬ জানুয়ারি বৃহত্তর ফরিদপুর জেলায় জম্মগ্রহণ করেন । তিনি ১৮৫৭ সালে জেনালের এসেম্বলিজ ইন্সিষ্টিটিউট থেকে ইংরেজী সাহিত্যে এম.এ. পাশ করেন । পরে বি এল পাশ করে ফরিদপুর বারে আইন ব্যবসায় যোগদান করেন। কংগ্রেসের রাজনীতিতে তিনি ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। আম্বিকাচরণ মজুমদারের সভাপতিত্বে ফরিদপুরে ১৯০৫ সালের জানুয়ারি মাসে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। আম্বিকাচরণ মজুমদারের নেতৃত্বে ফরিদপুরের উকিল ও মোক্তারগণ স্বদেশী আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেন। জেলার রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকান্ডে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন । আম্বিকাচরণ মজুমদারই হচ্ছেন রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রতিষ্ঠাতা এবং তিনি কংগ্রেসের ৩১ তম সভাপতি ছিলেন । ১৯২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর কংগ্রেসের এই প্রখ্যাত নেতা মৃত্যুবরণ করেন।

 

 

হাজী শরিয়তুল্লাহ

শরীয়তুল্লাহর জন্ম তৎকালীন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এর শাসনাধীন বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির ফরিদপুর জেলার চর শামাইল গ্রামের এক দরিদ্র তালুকদার পরিবারে। ছেলেবেলায় তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে চলে আসেন কলকাতায়। তিনি তার গুরু মওলানা বাশারত আলীর সাথে ১৭৯৯ খ্রিষ্টাব্দে মক্কায় হজের উদ্দেশ্যে গমন করেন, এবং ১৮১৮ খ্রিষ্টাব্দে সেখান থেকে দেশে ফিরে আসেন। তিনি আরবি ভাষায় পণ্ডিত ছিলেন।

হাজী শরীয়তুল্লাহ (১৭৮১-১৮৪০) ধর্মীয় সংস্কারক, নীলকর ও সামন্তবাদ বিরোধী নেতা এবং ভারতবর্ষে সংঘটিত ফরায়েজি আন্দোলনের মুখপাত্র । তিনি শুধু ধর্মীয় সংস্কারক ছিলেন না, বরং কৃষক, তাঁতি এং অন্যান্য শ্রমজীবী মানুষকে শোষণ থেকে মুক্ত করার জন্য সংস্কার আন্দোলন পরিচালনা করেছিলেন।

 

 

 

 

 

হুমায়ুন কবির (শিক্ষাবিদ )

হুমায়ুন কবির (২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯০৬-১৮ আগস্ট, ১৯৬৯) একজন ভারতীয় বাঙালি শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, লেখক ও দার্শনিক । তার জন্ম অবিভক্ত বাংলার ফরিদপুরের, বর্তমান বাংলাদেশের, কোমরপুর গ্রামে। তিনি দুই দফায় ভারতের শিক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। প্রথম দফায় জওহরলাল নেহেরুর মন্ত্রীসভায় এবং এর পরবর্তীকালে আরেকবার। এছাড়া তিনি বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খান বাহাদুর কবিরুদ্দিন আহমদ তার পিতা। নওগাঁ কে.ডি. স্কুল থেকে ইংরেজিতে লেটারসহ প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক (১৯২২) পাস। অতঃপর কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি। এই কলেজ থেকে ইংরেজিতে লেটারসহ প্রথম বিভাগে তৃতীয় স্থান অধিকার করে আই. এ. (১৯২৪), ইংরেজিতে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে বি.এ. অনার্স (১৯২৬) এবং ইংরেজিতে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে এম. এ. (১৯২৮) ডিগ্রি লাভ। সরকারি বৃত্তি পেয়ে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য ইংল্যান্ড গমন (১৯২৮)। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একসেটর কলেজে ভর্তি। অক্সফোর্ড ইউনিয়নের সেক্রেটারি নির্বাচিত। অক্সফোর্ড থেকে দর্শন, ইতিহাস ও অর্থনীতিতে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে বি. এ. অনার্স ডিগ্রি লাভ (১৯৩১)

 

বিচারপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিমঃ

 

বিচারপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিমের জন্ম ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামে ১৮৯৪ সালে। তিনি ছিলেন আইনজ্ঞ ও রাজনীতিবিদ। বরিশাল জিলা স্কুল থেকে ১৯১৪ সালে ম্যাট্রিক, ১৯১৬ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আইএ ও ১৯১৮ সালে একই কলেজ থেকে ইংরেজিতে বিএ (অনার্স) পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিষয়ে এমএ কোর্স সমাপ্ত করেন।

১৯২০ সালে ঐতিহাসিক অসহযোগ আন্দোলনে অংশগ্রহণ এবং ব্রিটিশ সরকার পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বর্জনের জন্য কংগ্রেসের আহ্বানে সাড়া দিয়ে নাগপুর সম্মেলনে যোগদান করেন। এমএ পরীক্ষাও বর্জন করেছিলেন। ১৯২২ সালে ঢাকা ল কলেজ থেকে বিএল পাস করে প্রথমে ফরিদপুর, পরে ঢাকা বারে আইন পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। কিছুকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের অধ্যাপনা করেন। ১৯৫৬ সালে এই পদ থেকে অবসর গ্রহণের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন। দেশে ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর প্রথমবারের মতো সামরিক আইন জারি হলে জেনারেল আইয়ুব খানের সামরিক সরকারের প্রথম কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আইনমন্ত্রী নিযুক্ত হন।

তবে সাংবিধানিক প্রশ্নে সরকারের সাথে মতবিরোধ ঘটায় ১৯৬২ সালের এপ্রিলে স্বেচ্ছায় মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করে মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে যোগ দেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে (২ জানুয়ারি ১৯৬৫) স্বৈরাচারী আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে কপের প্রার্থী এবং পাকিস্তানি জাতির পিতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর বোন ফাতেমা জিন্নাহর পক্ষে প্রচারকাজে অংশগ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলন চলাকালে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান অস্ত্র প্রয়োগের ভয় দেখালে তিনি এর তীব্র প্রতিবাদ জানান। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বিশেষ করে ১৯৬২ সালের অগণতান্ত্রিক সংবিধান, আইয়ুব সরকারের স্বৈরাচারী ও জনস্বার্থবিরোধী ভূমিকা এবং পূর্ববাংলার প্রতি বৈষম্যমূলক নীতির তীব্র প্রতিবাদ করেন। তার প্রতিবাদী কণ্ঠ ও বক্তিৃতা-বিবৃতি স্বাধিকার আন্দোলনকারীদের মনে প্রেরণা সৃষ্টি করেছিল। তিনি ১৯৬৬ সালের ১৩ নভেম্বর ঢাকায় ইন্তেকাল করেন। জাতীয় অধ্যাপক সুফিয়া আহমদ তার কন্যা।

 

 

 

পল্লী কবি জসীম উদ্‌দীন:

পল্লী কবি জসীম উদ্‌দীন  ১৯০৩ সালে ফরিদপুর জেলার সদর উপজেলার তাম্বুলখানা গ্রামেনানাবাড়ীতে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের জন্মগ্রহণ করেন। ঔপনিবেশিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েও তিনি বাংলার পল্লী প্রকৃতির রূপমাধুর্য, সহজ সরলমানুষের জীবন ধারণ তাঁর কাব্য সাহিত্যের উপজীব্য হিসেবে নেন। যে মাটি থেকে উথিত তিনি, যে মানুষেরা এই মাটির আদরে লালিত, যারা তথাকথিত ভদ্র লোক সমাজের বিবেচনা থেকে বঞ্চিত ও নাগরিকতা থেকে নির্বাসিত তাদের তিনি আপন করেনিলেন চিরকালেল মত। তাদের নিয়েই তিনি যাপন করলেন তার শিল্প জীবন। বাংলারপ্রধানতঃ পল্লী অঞ্চলে ছড়িয়ে রয়েছে বিশাল মুসলমান সম্প্রদায়, কৃষি যাদেরপ্রধান উপজীবিকা, তাদের মধ্যেই জসীম উদ্‌দীনের আবির্ভাব। জসীম উদ্‌দীনের বাল্য, কৈশোর ও যৌবনের অনেকটাই কেটেছে এ পল্লীতে, সেখানকার মাঠে-ঘাটে, নদীতীরেবালু চরে সাধারণ মানুষের মধ্যে। জন্মসূত্রে পল্লীর সাথে তাঁর এই নিবিড় সম্পর্কের কারণেই তার সাহিত্য কাব্যে প্রতিফলিত হয়েছে পল্লী প্রকৃতি। তিনি হয়েছেন মাটি ও মানুষের কবি পল্লীকবি। মহান এ কবি ১৪ মার্চ ১৯৭৬ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

 

 

 

বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক মুন্সী আবদুর রউফঃ

মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী স্বাধীনতার সূর্য সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ ১৯৪৩ সালের ১লা মে ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার সালামতপুর (রউফ নগর ) গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৩ সনের ০৮ মে তারিখে তৎকালীন ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস বাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তিনি চট্রগ্রামের ই.পি.আর-এ ১১ নং উইং এ কর্মরত ছিলেন।যুদ্ধ শুরু হলে তার উইং এ কর্মরত সকল সৈনিক ৮ মে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। ০৮ এপ্রিল ১৯৭১ তারিখে শক্রপক্ষে ২য় কমান্ডে ব্যাটালিয়নের ন্যূনপক্ষে ১টি কোম্পানী লঞ্চ ও স্পীডবোটে করে প্রতিরক্ষা এলাকায় ঢুকে পড়ে এবং অতর্কিতে মুক্তিবাহিনীর লোকদের উপর আক্রমন চালালে প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত সকল লোক বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়। একমাত্র শহীদ ল্যান্স লায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ নিজের মেশিনগান দিয়ে শক্রর উপর গোলাবর্ষণ অব্যাহত রাখেন, যার ফলে শক্রপক্ষের ২টি লঞ্চ ও ১টি স্পীডবোট পানিতে ডুবে যায় এবং প্রায় ২ প্লাটুন শক্র সৈন্য মারা যায়। হটাৎ করেই শক্রপক্ষের মর্টারের একটি গোলা তার অবস্থানে আঘাত হানলে তিনি শাহাদত বরণ করেন।